অশ্বগন্ধা কী?

আপনি যদি আয়ুর্বেদ চিকিৎসা করে থাকেন বা বিকল্প চিকিৎসায় বিশ্বাসী হন, তাহলে বহুবার অশ্বগন্ধার নাম শোনার সম্ভাবনা আছে। আর কেনই বা নয়? অশ্বগন্ধা হচ্ছে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আয়ুর্বেদী ভেষজ। অথর্ববেদ অনুসারে, হাজার হাজর বছর ধরে অশ্বগন্ধার উপস্থিতি এবং ব্যবহার লক্ষ করা যায়। ভারতীয় চিকিৎসা শাস্ত্রের ইতিহাসে এটিকে ‘‘অত্যাশ্চর্য ভেষজ’’ বা অ্যাডাপ্টোজেন (মানসিক চাপ মুক্তির এজেন্ট) বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে কারণ মানসিক চাপের উপসর্গ বা দুশ্চিন্তার উপসর্গ কমাতে সাধারণ ভেষজের মধ্যে এটি সর্বাপেক্ষা বেশি ব্যবহৃত হয়।   

অশ্বগন্ধা নামটি এসেছে অশ্ব বা ঘোড়া এবং গন্ধা বা গন্ধ থেকে। তাছাড়া মূলত এই নামটি এসেছে অশ্বগন্ধার মূল বা শিকড় থেকে, যা থেকে ঘোড়ার প্রস্রাব বা ঘামের গন্ধ পাওয়া যায়। অতিরিক্তভাবে আয়ুর্বেদ গবেষকেরা বিশ্বাস করেন, অশ্বগন্ধা গ্রহণ করলে ঘোড়ার মত শক্তি (শারীরিক শক্তি এবং যৌনক্ষমতা) অর্জন করা যায়।

অশ্বগন্ধার কিছু প্রাথমিক তথ্য:

  • বৈজ্ঞানিক নাম: উইথানিয়া সমনিফেরা
  • পরিবার: সোলানিসিয়াইওই (নাইটশেড ফ্যামিলি)
  • সংস্কৃত নাম: অশ্বগন্ধা, বরাহকর্নী (পাতা দেখতে শূকরের কানের মত), কামারূপিনি
  • সাধারণ নাম: উইন্টার চেরি, ইন্ডিয়ান জিনসেন, পয়জন গুজবেরি
  • যে অংশ ব্যবহৃত হয়: মূলত মূল বা শিকড় এবং পাতা, তবে ফুল এবং বীজও ব্যবহার হয়।
  • যেখানে উদ্ভূত এবং ভৌগৌলিক বণ্টন: অশ্বগন্ধা ভারতের অধিকাংশ ঊষ্ণ এলাকায় (মূলত মধ্যপ্রদেশ এবং রাজস্থান), নেপাল, আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্য, তবে এখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও পৌঁছে গিয়েছে।     
  1. অশ্বগন্ধা কীভাবে কাজ করে - How does Ashwagandha work in Bengali
  2. স্বাস্থ্যের উপকারিতা এবং অশ্বগন্ধার ব্যবহার - Health Benefits and Uses of Ashwagandha in Bengali
  3. অশ্বগন্ধা এবং অশ্বগন্ধা পাউডার কী করে ব্যাবহার করা হয়। - How to use Ashwagandha and Ashwagandha Powder in Bengali
  4. অশ্বগন্ধার ডোজ - Ashwagandha Dosage in Bengali
  5. অশ্বগন্ধার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া - Side effects of Ashwagandha in Bengali
অশ্বগন্ধা উপকার, পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ব্যবহার এবং ডোজ ৰ ডক্তৰ

অশ্বগন্ধা একাধিক ‘পদ্ধতিতে’ কাজ করে। ভেষজশাস্ত্রে পদ্ধতি বলতে বোঝানো হয়, কী করে একটি ভেষজ বা উদ্ভিদ শরীরের ওপর কাজ করে। শরীরের সামগ্রিক উন্নতির জন্য একটি ভেষজের নির্দিষ্ট পদ্ধতিগুলিকে বিভিন্ন নামে অভিহিত করা হয়। ভেষজ হিসাবে অশ্বগন্ধার সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় ব্যবহারগুলি নিচের তালিকায় দেওয়া হল:  

  • মানসিক চাপ এবং উদ্বেগ কমাতে ব্যবহার হয় বলে এটিকে অ্যাডাপ্টোজেন বলা হয়।
  • শরীরকে চাঙা করে এবং শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়।
  • সাম্প্রতিক কয়েকটি গবেষণার ফলাফলে জানা গিয়েছে, অশ্বগন্ধার মধ্যে কিছু ক্যান্সার প্রতিরোধী উপাদান রয়েছে। ক্যান্সারের চিকিৎসায় এই ভেষজের সম্ভাব্য ব্যবহার জানতে গবেষণার কাজ এখনও চলছে।
  • একটি গবেষণার পর সংশ্লিষ্ট ভারতীয় বৈজ্ঞানিকেরা দাবি করেছেন, সন্ধিস্থলের ব্যাথা, বিশেষত যাঁরা রিউম্যাটয়েড আর্থারাইটিসে আক্রান্ত, কমাতে এটি কার্যকরী।   
  • সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে অশ্বগন্ধা জীবনীশক্তি এবং যৌনস্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়।
  • মূত্রবর্ধক (ডাইরেটিক)হওয়ায় শরীর থেকে অতিরিক্ত তরল এবং লবণ বার করতে সাহায্য করে।
  • শরীর পরিষ্কার রাখা এবং অকল বার্ধক্যের উপসর্গ প্রতিরোধ করে।
  • একটি সমীক্ষায় পাওয়া গিয়েছে, পুরুষের শুক্রাণূবৃদ্ধি ঘটায়।
  • শক্তিবর্ধক হিসাবে অশ্বগন্ধা শরীর উষ্ণ রাখে। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে বলা হয় এটি পিত্ত বৃদ্ধি ঘটায়।    

সুতরাং পিত্ত কাকে বলে?

আয়ুর্বেদ-এ তিনটি ‘‘দোষ’’- বা শরীরে ক্ষমতা নিয়ন্ত্রকের এর কথা বলা হয়েছে ব্যক্তির সুস্বাস্থ্যের জন্য যেগুলির মধ্যে সমতা থাকা জরুরি। এগুলি হল:

  • বাত- শরীরের গতিবিধি এবং স্নায়ুতন্ত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।
  • পিত্ত- শরীরের বিপাক ক্রিয়া নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে সংযুক্ত।
  • কফ- শরীরের ফ্লুইড ব্যালেন্স বা জলীয় পদার্থের সমতার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট।

মানসিক চাপ কম করে বলে খ্যাতি থাকলেও অশ্বগন্ধার বিভিন্ন ধরনের কার্যকারিতা আছে। স্বাস্থ্যোন্নয়নে এই ভেষজ উদ্ভিদ কী কাজ করে একবার দেখে নেওয়া যাক।

  • মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটায়: অশ্বগন্ধা একটি নামকরা অ্যাডাপ্টোজেন। দেখা গিয়েছে, এটি মানসিক চাপ, অবসাদ এবং দুশ্চিন্তা কমায় এবং মানসিক চাপ সংক্রান্ত সমস্যা যেমন উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়বিটিস প্রতিরোধ করে।
  • ডায়বিটিস নিয়ন্ত্রণ করে: গবেষণাপত্রে প্রকাশ পেয়েছে, অশ্বগন্ধা উন্নতমানের ডায়বিটিস প্রতিরোধী (অ্যান্টি-ডায়বিটিস)।এটি স্বাস্থ্যবান এবং ডায়বিটিস আক্রান্তদের রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
  • আর্থারাইটিসের উপসর্গ কম করে: কার্যকর প্রদাহ-বিরোধী হওয়ায় অশ্বগন্ধা আর্থারাইটিসের ব্যাথা এবং ফোলা কমায়। পিত্ত, আয়ুর্বেবেদিক চিকিৎসাশাস্ত্রে যাকে আর্থারাইটিসের কারণ বলে ধরা হয়, তার সমতা নিয়ে আসে।
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে: গবেষণায় প্রকাশিত যে অশ্বগন্ধা হচ্ছে অসাধারণ ইমিউনোস্টিমুলেটর (রোগ প্রতিরোধী)। সংক্রমণের বিরুদ্ধে শরীরের রোগ প্রতিরোধী শক্তি বাড়িয়ে তোলে।           
  • ক্ষত নিরাময়ে অনুঘটক: ক্ষত নিরাময় দ্রুত হওয়ার জন্য প্রাথমিক স্তরে অশ্বগন্ধা খাওয়ানোর সুপারিশ করা হয়। তবে এই গুণের নিশ্চিত প্রমাণের জন্য আরও মানুষের ওপর প্রয়োগের সমীক্ষার প্রয়োজন আছে।
  • নিদ্রা গাঢ় করে: চাপ এবং দুশ্চিন্তা কমিয়ে অশ্বগন্ধা মাথা ঠান্ডা করতে সাহায্য করে বলে ঘুম খুব ভাল হয়।
  • যৌনক্ষমতা বাড়ায়: অশ্বগন্ধা পুরুষ এবং নারীদের যৌনক্ষমতা বৃদ্ধি করে। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, মানসিক সমস্যার দরুণ পুরুষদের লিঙ্গ উচ্ছৃত হওয়ার সমস্যা দূর করতে এবং শুক্রাণু বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।           
  • থাইরয়েড প্রক্রিয়া বৃদ্ধি করে: দেখা গিয়েছে অশ্বগন্ধা শরীরে T4 মাত্রা বৃদ্ধি করতে এবং হাইপোথাইরয়েডিজম কমাতে সাহায্য করে। তবে, মানব শরীরে ব্যবহার নিরাপদ কিনা তা জানতে আরও পরীক্ষার প্রয়োজন আছে।   
  • হৃদযন্ত্রের ক্ষমতা বৃদ্ধি করে: অশ্বগন্ধা হৃদয়ের পেশি শক্তিশালী করে হৃদযন্ত্রের সামগ্রিক ক্ষমতা বৃদ্ধি করে, যার ফলে রক্ত জমাট হয় না এবং হৃদয় ( হার্ট) এর ওপর চাপ কমে। হৃদরোগের অন্যতম ঝুঁকি কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়।       
  • মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য বৃদ্ধি করে: সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে অশ্বগন্ধা পার্কিনসন ও অ্যালজাইমারের দরুণ স্নায়বিক ক্ষতির হার কমিয়ে দেয়। তবে এর কার্যকারণ এখনও জানা যায়নি।  
  • অ্যাড্রিনাল ফেটিগ প্রতিরোধ করে: এটি যেহেতু একটি অ্যাডাপ্টোজেনিক ভেষজ, অশ্বগন্ধা মন শান্ত করে, যা আবার শরীরে কর্টিসল মাত্রা (স্ট্রেস হরমোন) কমায়। সেটি আবার বৃক্কের ওপর চাপ কমায় বলে অ্যাড্রিনাল ফেটিগ (অড্রিনাল ক্ষরণজনিত ক্লান্তি) হ্রাস পায়।
  • সাপের বিষনাশক (অ্যান্টি-ভেনম) হিসাবে কার্যকলাপ: সমীক্ষায় পাওয়া গিয়েছে, সাপের কামড়ের জায়গায় অশ্বগন্ধার প্রলেপ সাপের বিষ প্রশমিত হয় এবং শরীরের অন্যত্র তা ছড়ায় না। স্বাভাবিকভাবে এটি চিরাচরিতভাবে সাপের বিষনাশক হিসাবে প্রচলিত।
  • ত্বকের জন্য উপকারী: অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের সমৃদ্ধ উৎস হওয়ার দরুণ অশ্বগন্ধা একটি প্রকৃত বার্ধক্য প্রতিরোধী ভেষজ। বয়ঃবৃদ্ধির প্রাথমিক উপসর্গ রোধ করে এবং শুষ্ক ত্বক এবং কেরাটোসিস-এর বিরুদ্ধে শরীর রক্ষা করে।    
  • চমৎকার কেশ টনিক: অশ্বগন্ধা চুলে পুষ্টি জোগায়, যা চুল পড়া কমতে সাহায্য করে এবং চুল দীর্ঘ এবং উজ্জ্বল করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হওয়ার কারণে অকালে চুলে পাক ধরা এবং চুল পড়া বন্ধ হয়।   
  • রজঃস্রাবের উপসর্গ হ্রাস করে: টনিক এবং অশ্বগন্ধার মানসিক চাপ প্রতিরোধী ক্ষমতা এটিকে মহিলাদের ঋতুচক্র চলাকালীন সময় চমৎকার কাজ দেয়। এটি চাপ, দুশ্চিন্তা কমায়, হরমোন নির্যাসে সমতা নিয়ে আসে, রজঃস্রাবের উপসর্গ হ্রাস করে।
  • পুরুষদের প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে: সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, অশ্বগন্ধা পুরুষদের প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এটি শুধুমাত্র শুক্রাণু সংখ্যা এবং টেস্টোস্টেরোন বৃদ্ধি করে না, এটি যৌনক্ষমতা এবং ক্রিয়ার উন্নতি ঘটায়।          

সুনিদ্রার জন্য অশ্বগন্ধা - Ashwagandha for a restful sleep in Bengali

গবেষকেরা ইঙ্গিত করেছেন, নিজে কড়া ঘুমের ওষুধ না হলেও এটি মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা কমিয়ে উত্তেজনা কমিয়ে এবং সুনিদ্রায় সাহায্য করে।

পুরুষদের জন্য অশ্বগন্ধার উপকারিতা - Ashwagandha benefits for men in Bengali

সমস্ত ভেষজ উদ্ভিদের মধ্যে অশ্বগন্ধা অন্যতম প্রধান যা পুরুষদের প্রজনন ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, নিয়মিত অশ্বগন্ধা সেবনে পুরুষদের মধ্যে শুধু যৌন ইচ্ছা বাড়ায় না, শুক্রাণু সংখ্যা এবং টেস্টোটেরনের হার বৃদ্ধিতে এটি কার্যকরী হয়। অশ্বগন্ধার এই যে চাঙা করার উপকারিতা আছে তা পুরুষদের যৌন স্বাস্থ্য উন্নয়নের সময় দেখা যায়, কারণ এটি শক্তি এবং পৌরুষত্ব বৃদ্ধি করে বলে যৌনক্রিয়ার উন্নতি হয়।

মহিলাদের জন্য অশ্বগন্ধার উপকারিতা - Ashwagandha benefits for women in Bengali

সমীক্ষায় পাওয়া গিয়েছে, হরমোনের সমতা আনতে এবং এবং রজঃস্রাবের উপসর্গ যেমন দুশ্চিন্তা, খিটখিটে ভাব এবং মহিলাদের মানসিক চাপ কমানোর ক্ষেত্রে অশ্বগন্ধা খুবই কার্যকরী। টনিক হিসাবে অশ্বগন্ধা গ্রহণে খাদ্যাভ্যাসের কারণে বহু ঘাটতি পূরণে তা সাহায্য করে আর ডায়রেটিক (মূত্রবর্ধক) হিসাবে শরীর থেকে বিষাক্ত উপাদানসমূহ (টক্সিন) বার করে দেয়। শরীরে যত টক্সিন কম থাকবে তত শরীরের কার্যকলাপ ভাল হবে। গবেষকরা দেখিয়েছেন, মহিলাদের মধ্যে যৌন ইচ্ছা বৃদ্ধিতে অশ্বগন্ধা কার্যকরী ভূমিকা নেয়। শরীরে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে এবং শরীরের চাপ কমিয়ে এটি এই কার্য সমাধা করে।

চুলের জন্য অশ্বগন্ধা - Ashwagandha for hair in Bengali

অশ্বগন্ধা চুলে পুষ্টি জোগায়, যা চুল পড়া কমতে সাহায্য করে এবং চুল দীর্ঘ এবং উজ্জ্বল করে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হওয়ার কারণে অকালে চুলে পাক ধরা এবং চুল পড়া বন্ধ হয়। অশ্বগন্ধার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং পুষ্টিকর প্রভাবের দরুণ এটি একটি আদর্শ কেশ টনিক হিসাবে কাজ করে। অশ্বগন্ধা চুলের গোড়ায় (ফলিকল) পুষ্টি জোগায় এবং চুল শক্ত করে। নিয়মিত অশ্বগন্ধা সেবনের ফলে শরীরের মানসিক চাপ কমে বলে জানা গিয়েছে, এবং ফলত চুল পড়া কমে। তাছাড়া, অশ্বগন্ধার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান ফ্রি র‌্যাডিক্যাল প্রতিরোধ করে এবং চুলের স্বাভাবিক রং নষ্ট হতে দেয় না।

ত্বকের জন্য অশ্বগন্ধার উপকারিতা - Ashwagandha benefits for skin in Bengali

এমন কেউ আছেন কি যিনি অমলিন এবং মসৃণ ত্বক পছন্দ করেন না? আপনি কি জানেন যে অশ্বগন্ধা ত্বকের অকাল বার্ধক্য প্রতিরোধে সাহায্য করে? শরীরে বয়স নেমে আসার সবচেয়ে প্রধান কারণ হচ্ছে ফ্রি র‌্যাডিক্যাল যা আমাদের শরীরে বিভিন্ন বিপাকীয় কার্যকলাপের দরুণ সৃষ্টি হয়। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট গুণাবলীর কারণে অশ্বগন্ধা এইসব ফ্রি র‌্যাডিক্যালের বিরুদ্ধে লড়াই চালাতে পারে এবং আপনার ত্বককে উজ্জ্বল এবং তাজা রাখতে পারে। শুধু তাই নয়, শরীরে ফ্রি র‌্যাডিক্যালের জন্য যে সমস্যা দেখা দেয় অর্থাৎ ত্বক কুঁচকে যাওয়া, ডার্ক স্পট এবং অকাল বার্ধক্যের অন্যান্য লক্ষণ, সেসব থেকে এটি বাঁচায়। অতিরিক্তভাবে, শুষ্ক এবং অমসৃণ ত্বকের জন্য দায়ী কেরাটোসিস-এর (ত্বকের একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি) বিরুদ্ধে ব্যবহার করা চলে। কেরাটোসিস-এর উপসর্গ কমাবার জন্য দৈনিক এক কাপ অশ্বগন্ধা চা সেবন করার পরামর্শ দেওয়া হয়।

সাপের বিষে অশ্বগন্ধা - Ashwagandha in snake bites in Bengali

বহু সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, সাপের বিষের (ভেনম) বিরুদ্ধে শরীরে স্বাভাবিক প্রতিরোধী ভূমিকা পালন করে অশ্বগন্ধা। বলা হয়, এটি হচ্ছে গ্লাইকোপ্রোটিন (এক ধরনের প্রোটিন) যা শরীরে হায়ালোনিডেস-সাপের বিষের একটি সক্রিয় উপাদান যা বিষকে পাশের টিস্যুগুলিতে পৌঁছে দেয়- ছড়াতে দেয় না। সাপের কামড়ের বিরুদ্ধে ভারতে প্রতিষেধক হিসাবে চিরাচরিতভাবে অশ্বগন্ধার একটি প্রলেপ ব্যবহার করা হয়।  

অ্যাড্রিনাল ফেটিগ প্রতিরোধে অশ্বগন্ধা - Ashwagandha for adrenal fatigue in Bengali

আপনি কি সবসময় ক্লান্তি বোধ করেন? এর কারণ হতে পারে অ্যাড্রিনাল ফেটিগ (অড্রিনাল ক্ষরণজনিত ক্লান্তি)। কখনও এর নাম শোনেননি? অধিকাংশ মানুষই শোনেননি। কিন্তু আজকের সদা ব্যস্ত এবং প্রবল গতির জীবনধারা, যখন জীবন প্রবলভাবে চাপের সম্মুখীন, তখন এটি নিয়মিত শোনা যাচ্ছে। সেটা কাজের চাপই হোক বা অন্য ধরনের চাপ, শরীরের ওপর নিরবচ্ছিন্ন চাপের ফলে অ্যাড্রিনাল গ্ল্যান্ড (বৃক্কের ওপরিভাগে অবস্থিত গ্ল্যান্ড) থেকে কর্টিসল নামে একটি হরমোন নিঃসৃত হয়, যা শরীরের অব্যতম ‘‘স্ট্রেস হরমোন’’। এরজন্যই ক্লান্তি, হজমের সমস্যা, অনিদ্রা এবং স্নায়ুদৌর্বল্য জাতীয় উপসর্গ দেখা দেয়। আপনারা ইতিমধ্যে জেনেছেন অশ্বগন্ধা চাপ প্রতিরোধী (অন্টি-স্ট্রেস) ভেষজ বলে আপনার অস্থিরতা কমাতে সাহায্য করে, ফলত আপনার কর্টিসল মাত্রা কম হয় এবং আপনি অ্যাড্রিনাল ফেটিগ-এর বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারেন।

স্নায়বিক রোগের জন্য অশ্বগন্ধা - Ashwagandha for neurological diseases in Bengali

দেখা গিয়েছে পার্কিনসন বা ADHD  ( মনোযোগহীনতা অতিরিক্ত চঞ্চলতা)-এর রোগের উপসর্গ হ্রাস করে অশ্বগন্ধা, যদিও এর কারণ সম্পর্কে পরিষ্কার করে কিছু জানা যায়নি।

স্বাস্থ্যকর হার্টের জন্য অশ্বগন্ধা - Ashwagandha for a healthy heart in Bengali

অশ্বগন্ধা শরীরে ট্রাইগ্লিসারাইড এবং কোলেস্টোরেলের মাত্রা কমায়। এই স্নেহ পদার্থগুলিই হৃদযন্ত্রের সমস্যা যেমন হৃদরোগ, স্ট্রোক এবং ধমনীতে রক্ত জমাট হয়ে যাওয়া জাতীয় বর্তমান যুগের বিভিন্ন অসুখের জন্য দায়ী।  

অতএব, অশ্বগন্ধার অ্যাডপ্টোজেনিক উপাদানসমূহ চাপ কমাতে খুব সাহায্য করে, এবং এই উদ্ভিদ পেশি শিথিল করে। সুতরাং হৃদয়ের পেশিগুলির ওপর চাপ কমাবার জন্য এটি উপযুক্ত এজেন্ট। কিছু গবেষক দাবি করে থাকেন, হৃদয়ের পেশিগুলির শক্তি বাড়াতে এই উদ্ভিদের টনিক কার্যকরী ভূমিকা নেয়। শারীরিক কসরতের সময় হার্ট এবং ফুসফুস কত পরিমাণ অক্সিজেন সরবরাহ করে অর্থাৎ কার্ডিওরেসপিরেটরি ক্ষমতার ওপর অশ্বগন্ধার প্রভাব কী পড়ে তা বুঝবার জন্য ভারতের কিছু নামকরা সাইকেল আরোহীর ওপর গবেষণা চালিয়ে ইতিবাচক ফল পাওয়া গিয়েছে। রক্তে বেশি পরিমাণ অক্সিজেন সরবরাহ হলে অতিরিক্ত সময় আমরা সক্রিয় থাকতে পারি। অনেকে শুনে বিস্মিত হতে পারেন যে অশ্বগন্ধার অন্টিকোঅ্যাগুলেন্ট গুণ আছে যা ধমনীতে রক্ত জমাট হওয়া প্রতিরোধ করে। কাজেই এই ভেষজ হার্টের অধিকাংশ সাধারণ সমস্যা প্রশমনে সাহায্য করে বলে একে চমৎকার কার্ডিওপ্রোটেক্টিভ (কার্ডিওভাসকুলার সিস্টেমকে রক্ষা করে) বলা যেতে পারে।

(আরও পড়ুন: হার্ট ডিজিজ কজেস অ্যান্ড প্রিভেনশন)                

থাইরয়েড প্রক্রিয়া বৃদ্ধি করে - Ashwagandha increases thyroid functions in Bengali

নির্দিষ্ট গবেষণায় জানা গিয়েছে, অশ্বগন্ধা শরীরে T4 হরমোন মাত্রা বৃদ্ধি করে। হাইপোথাইরয়েডিজমের (এমন এক অবস্থা যখন শরীরে থাইরয়েড হরমোনের মাত্রা কম আছে) সম্ভাব্য চিকিৎসার ক্ষমতা এই ভেষজ উদ্ভিদের আছে কিনা পরীক্ষা করে দেখার জন্য বহুবিধ সমীক্ষা চলছে।

যৌনক্ষমতা বাড়াতে অশ্বগন্ধা - Ashwagandha for improving sexual health in Bengali

বলা হয়, অশ্বগন্ধা পুরুষ এবং নারীদের যৌনক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং পুরুষদের সাইকোজেনিক কারণে লিঙ্গ উচ্ছৃত না হলে (মানসিক সমস্যার দরুণ পুরুষদের লিঙ্গ দৃঢ় না হওয়া) তার চিকিৎসা করলে উল্লেখযোগ্য ফল পাওয়া যায়। একটি সাম্প্রতিক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, নিয়মিত অশ্বগন্ধা সেবনে শুক্রাণুর সংখ্যা বৃদ্ধিতে সাহায্য করতে পারে।

ক্ষত নিরাময়ে অশ্বগন্ধা সাহায্য করে - Ashwagandha helps heal wounds in Bengali

আয়ুর্বেদ শাস্ত্রের মতে ক্ষত নিরাময়ে অশ্বগন্ধা একটি চমৎকার এজেন্ট। সাধারণত অশ্বগন্ধার একটি প্রলেপ আক্রান্ত ত্বকের ওপর লাগানো হয়। ডায়বিটিসে আক্রান্ত পশুদের ওপর অশ্বগন্ধার প্রয়োগের প্রভাব পরীক্ষা করতে ভারতে ব্যাপক গবেষণা চালানো হয়েছে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ক্ষতস্থান দ্রুত নিরাময় হয় এবং যদি শরীরের ওপরে অশ্বগন্ধার প্রলেপ না দিয়ে তা মুখ দিয়ে খাওয়ানো হয় তাহলে তা আরও ভাল কাজ করে। তবে যেহেতু, মানব শরীরের ওপর পরীক্ষানিরীক্ষা হয়নি, অতএব যে কোনও ক্ষত নিরাময়ের জন্য অশ্বগন্ধার প্রয়োগের আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।  

সংক্রমণ বিরোধী ক্ষমতা ভালভাবে বাড়াতে অশ্বগন্ধা - Ashwagandha for a strong immune system in Bengali

‘‘মিটাকি মাশরুম নির্যাস’’-এর (খাদ্যোপযোগী ছত্রাক যা সাধারণত এশিয়ায় খাওয়া হয়) সঙ্গে অশ্বগন্ধাও ফ্যাগোসাইটিক ক্রিয়া (আমাদের শরীরে অচেনা প্যাথোজেনকে ধ্বংস করার ক্ষমতা) বাড়াতে সাহায্য করে। এভাবে এটি আমাদের শরীরে সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ক্ষমতা বাড়ায়। কাজেই পরের বার যখন আপনার শরীর খারাপ লাগবে তখন অশ্বগন্ধা চায়ে চুমুক দিন এবং সর্দি-কাশি বা ঠান্ডা লাগার সঙ্গে যুঝতে শুরু করুন।   

(আরও পড়ুন: ইমিউনিটি বুস্টিং খাদ্য)

আর্থারাইটিক-বিরোধী হিসাবে অশ্বগন্ধা - Ashwagandha as an anti-arthritic in Bengali

আপনি কি গাঁটের (সন্ধিস্থল) যন্ত্রণা বা সেখানে ফুলে যাওয়ার জন্য কষ্ট পাচ্ছেন? সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, অশ্বগন্ধার মধ্যে প্রদাহ বিরোধী উপাদানসমূহ রয়েছে। আর্থারাইটিস-এর উপসর্গ লাঘবে এগুলি বিশেষভাবে কার্যকরী। আয়ুর্বেদে আর্থারাইটিসকে বাত এবং শরীরে পরিপাক ক্রিয়া বা পিত্ত-এর অসামঞ্জস্যের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে উল্লেখ করা হয়, অশ্বগন্ধা পিত্ত বৃদ্ধি করে এবং বাত এবং কফ হ্রাস করে। এভাবে গাঁটের ব্যাথা কমাতে সাহায্য করে। এ ছাড়া প্রদাহ বিরোধী গুণের দরুণ ত্বকের সমস্যা যেমন এগজিমা, সোরাইসিস এবং খুসকি জাতীয় চুলের সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।  

ডায়বিটিসের জন্য অশ্বগন্ধা - Ashwagandha for diabetes in Bengali

সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, যাঁদের ডায়বিটিস আছে সে সব রোগীর ক্ষেত্রে শরীরে ইনসুলিন ক্ষরণের পরিমাণ বৃদ্ধি করে রক্তে শর্করার মাত্রা কমায়। শুধুমাত্র যাঁদের ডাইবিটিস আছে তাঁদের ক্ষেত্রেই নয়, দেখা গিয়েছে স্বাস্থ্যবান ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেও রক্তে শর্করার পরিমাণ কমাতেও এটি একইরকম কার্যকরী। তবুও প্রতাহিক রুটিনের মধ্যে অশ্বগন্ধা ব্যবহার চালু করার আগে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করার সুপারিশ করা হয়ে থাকে।

মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য অশ্বগন্ধা - Ashwagandha for mental health in Bengali

অশ্বগন্ধার বহু উপকারিতা এবং ব্যবহার আছে তবে এটি প্রাথমিকভাবে মানসিক চাপ প্রতিরোধী থেরাপির জন্য ব্যবহৃত হয়।

এর দুশ্চিন্তা নিরোধক উপাদানের সঙ্গে চিন এবং সাইবেরিয়ার জিনসেন-এর তুলনা করা হয়। একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, অশ্বগন্ধার ব্যবহারে দুশ্চিন্তা এবং মানসিক চাপের কারণে উদ্ভূত অবসাদ উল্লেখযোগ্যভাবে কমে। এর অ্যাড্যাপ্টোজেনিক এবং পুষ্টিবর্ধক ক্ষমতার জন্য বিশেষভাবে তা সম্ভব হয়। বলতে হয়, এর অ্যাড্যাপ্টোজেনিক গুণ বহু মানসিক চাপ সম্পর্কিত রোগ, যেমন অকাল বার্ধক্য, উচ্চ রক্তচাপ (হাইপারটেনশন) এবং ডায়বিটিস প্রতিরোধে সহায়তা করে।               

নিদ্রাহীনতা, টিউমার, যক্ষা, অ্যাজমা বা হাঁপানি, লিউকোডার্মা, ব্রঙ্কাইটিস, ফাইব্রোমায়লজিয়া, অ্যাড্রিনাল ফেটিগ জাতীয় রোগের ক্ষেত্রে বরাবর অশ্বগন্ধার মূল ব্যবহার হয়ে এসেছে। তবে শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য, যা আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে রসায়ন বলে অভিহিত হয়, এই ভেষজ উদ্ভিদটি মূলত সাধারণ টনিক বেশি ব্যবহার হয়।

কিছু গবেষকের মতে আপনার স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য অশ্বগন্ধা হচ্ছে অন্যতম পন্থা, কারণ এটি একটি পুষ্টিবর্ধক টনিক যা আপনার বাগান থেকেই উদ্ভূত হয়।  

অশ্বগন্ধার সর্বাধিক ব্যবহার চায়ের গুঁড়োর মত পাউডার আকারে। দুধ, ঘি বা মধুর সঙ্গে মিশ্রিত করে এটি খাওয়া হয়। বর্তমানে অশ্বগন্ধা টিংচার (উদ্ভিদের নির্যাসের সঙ্গে অ্যালকোহলের মিশ্রণ) এবং ক্যাপসুল বেশি জনপ্রিয় কারণ এগুলি গ্রহণ করা সহজ এবং এগুলি কাজও করে দ্রুত।

সিরাপ, শরীরের উপরিভাগে লাগানো ক্রিম, এবং পেস্ট হিসাবেও এটি বাজারে পাওয়া যায়।    

এখানে সাধারণভাবে একটি ডোজের নিয়ম জানানো হচ্ছে। তবে, আপনাকে গুরুত্ব দিয়ে বলা হচ্ছে, আপনার আয়ুর্বেদ চিকিৎসক আপনাকে যে ডোজ দেবেন সেটিই অনুসরণ করবেন।

  • সাধারণ ডোজ হল, এক কাপ চা, দুধ বা মধুর সঙ্গে 1-2 চা চামচ অশ্বগন্ধা পাউডার মিশ্রিত করে অথবা দিনে দু’বার 1-2 টি ক্যাপসুল কাওয়া।
  • অশ্বগন্ধার মূল, দুধ, মধু এবং বাদামের মিশ্রণ ঘুমের টনিক হিসাবে বাবহার করা যেতে পারে। এতে চাপ এবং দুশ্চিন্তা কমে।
  • অশ্বগন্ধা পাতার একটি পেস্ট বা মলমের প্রলেপ ক্ষত বা প্রদাহের চিকিৎসায় ব্যবহার করা যায়।
  • যখন মধুর সঙ্গে মিশ্রিত করে ব্যবহার করা হয়, তখন যৌনস্বাস্থ্যের জন্য তা উপকারী হয়।
  • অশ্বগন্ধার নির্যাসের সঙ্গে অ্যালকোহল মিশিয়ে টিংচার প্রস্তুত করা যেতে পারে। এটি সহজেই রক্তের সঙ্গে মিশে যায় এবং এই ভেষজ অন্যভাবে ব্যবহারের চেয়ে দ্রুত ফল দেয়। টিংচারের শক্তি এবং রোগীর বয়স এবং লিঙ্গের ওপর অশ্বগন্ধা টিংচারের ডোজ নির্ভর করে। এই ভেষজের টিংচার গ্রহণের পূর্বে কোনও ভেষজবিদের পরামর্শ নিন।

অশ্বগন্ধার প্রভূত উপকারিতা থাকলেও তার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াও আছে। এই ভেষজ গ্রহণের পুর্বে আপনার চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা খুব জরুরি। 

  • যাঁদের শরীরে পিত্তের প্রভাব থাকে তাঁদের শরীর স্বভাবতই উষ্ণ থাকে, অশ্বগন্ধার উষ্ণ প্রভাবের দরুণ, ওইসব ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এটির দীর্ঘস্থায়ী ব্যবহার ভাল হয় না। দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহার করলে গ্যাস্ট্রিক আলসার, ডায়রিয়া (আন্ত্রিক), এবং বমিভাব দেখা যেতে পারে।  
  • নিজের খাদ্যাভ্যাসে অশ্বগন্ধা ব্যবহার করতে চাইলে রেজিস্ট্রিকৃত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। যে ওষুধ আপনি ইতিমধ্যেই গ্রহণ করেছেন তার প্রতিক্রিয়ার ওপর এটি প্রভাব ফেলতে পারে। যেমন, যিনি রক্তে শর্করা কমানোর ওষুধ নিয়ে থাকেন তিনি অশ্বগন্ধা ব্যবহার করলে রক্তে শর্করার মাত্রা বেশি নেমে যেতে পারে (হাইপোগ্লাইসেমিয়া)।
  • গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে এটির ব্যবহার নিরাপদ বলে মনে করা হয় না, বহুসময় দেখা গিয়েছে, পশুপাখিদের বেশি মাত্রার ডোজ দেওয়ার ফলে গর্ভপাত অথবা নির্দিষ্ট সময়ের আগে প্রসব হয়ে গিয়েছে। 
  • অশ্বগন্ধা রক্ত পাতলা করে এবং এটি অ্যান্টিকোঅ্যাগুলেন্ট, কাজেই আপনার শরীরে যদি অস্ত্রোপচারের কথা থাকে বা আপনার শরীরে সাম্প্রতিককালে অস্ত্রোপচার হয়ে থাকে তাহলে এটি ব্যবহার করা উচিত নয়। যদি আপনি সক্ত পাতলা করার ওষুধ গ্রহণ করছেন তাহলে তার সঙ্গে এটি ব্যবহার করা উচিত নয় কারণ তাহলে রক্ত বেশি পাতলা হয়ে যেতে পারে যা আপনার স্বাস্থ্যের পক্ষে ভাল নয়।
  • এটির মধ্যে সামান্য ঘুমের ওষুধের কার্যকারিতা থাকে বলে এটি খেলে ঘুম ঘুম ভাব আসতে পারে। কাজেই কোনও ঘুমের ওষুধের সঙ্গে এটি গ্রহণ করা উচিত নয়, কারণ তাতে অতিরিক্ত ঘুম হবে।  
Dr Bhawna

Dr Bhawna

Ayurveda
5 Years of Experience

Dr. Padam Dixit

Dr. Padam Dixit

Ayurveda
10 Years of Experience

Dr Mir Suhail Bashir

Dr Mir Suhail Bashir

Ayurveda
2 Years of Experience

Dr. Saumya Gupta

Dr. Saumya Gupta

Ayurveda
1 Years of Experience


Medicines / Products that contain Ashwagandha

তথ্যসূত্র

  1. Wadhwa R, Singh R, Gao R, et al.Water Extract of Ashwagandha Leaves Has Anticancer Activity: Identification of an Active Component and Its Mechanism of Action
  2. Jessica M. Gannon, Paige E. Forrest, K. N. Roy Chengappa. Subtle changes in thyroid indices during a placebo-controlled study of an extract of Withania somnifera in persons with bipolar disorder. J Ayurveda Integr Med. 2014 Oct-Dec; 5(4): 241–245. PMID: 25624699
  3. Kumar G, Srivastava A, Sharma SK, Rao TD, Gupta YK. Efficacy & safety evaluation of Ayurvedic treatment (Ashwagandha powder & Sidh Makardhwaj) in rheumatoid arthritis patients: a pilot prospective study.. Indian J Med Res. 2015 Jan;141(1):100-6. PMID: 25857501
  4. Vaclav Vetvicka, Jana Vetvickova. Immune enhancing effects of WB365, a novel combination of Ashwagandha (Withania somnifera) and Maitake (Grifola frondosa) extracts. N Am J Med Sci. 2011 Jul; 3(7): 320–324. PMID: 22540105
  5. Taranjeet Kaur and Gurcharan Kaur. Withania somnifera as a potential candidate to ameliorate high fat diet-induced anxiety and neuroinflammation. J Neuroinflammation. 2017; 14: 201. PMID: 29025435
  6. Chandrasekhar K1, Kapoor J, Anishetty S. A prospective, randomized double-blind, placebo-controlled study of safety and efficacy of a high-concentration full-spectrum extract of ashwagandha root in reducing stress and anxiety in adults.. Indian J Psychol Med. 2012 Jul;34(3):255-62. PMID: 23439798
  7. Narendra Singh, Mohit Bhalla, Prashanti de Jager, Marilena Gilca. An Overview on Ashwagandha: A Rasayana (Rejuvenator) of Ayurveda . Afr J Tradit Complement Altern Med. 2011; 8(5 Suppl): 208–213. PMID: 22754076
  8. Vijay R. Ambiye et al. Clinical Evaluation of the Spermatogenic Activity of the Root Extract of Ashwagandha (Withania somnifera) in Oligospermic Males: A Pilot Study . Evidence-Based Complementary and Alternative Medicine Volume 2013, Article ID 571420, 6 pages
  9. Mahesh K. Kaushik et al. Triethylene glycol, an active component of Ashwagandha (Withania somnifera) leaves, is responsible for sleep induction . PLoS One. 2017; 12(2): e0172508. PMID: 28207892
Read on app