এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি (জরায়ুর বাইরে গর্ভধারণ) - Ectopic Pregnancy in Bengali

Dr. Ayush PandeyMBBS,PG Diploma

December 03, 2018

July 31, 2020

এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি
এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি

এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি (জরায়ুর বাইরে গর্ভধারণ) কি?

এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি (জরায়ুর বাইরে গর্ভধারণ) হলো একটা অবস্থা যেখানে নিষিক্ত ডিম্বাণু ইউটেরাস (গর্ভাশয়)-এর বাইরে কোথাও স্থাপিত হয়, সাধারনত কোনও একটি ফ্যালোপিয়ান টিউবে, আবার কখনও ডিম্বাশয়, সারভিক্স (জরায়ু গ্রীবা) বা পেটের ভিতরে। ফ্যালোপিয়ান টিউব হলো একটা লম্বা টিউব, যেটা ইউটেরাসের সঙ্গে যুক্ত থাকে এবং যেটি ওভারি থেকে ডিম্বাণু ইউটেরাসে বহন করে। এটা বৃদ্ধিপ্রাপ্ত নিষিক্ত ডিম্বাণু ধরে রাখতে পারে না এবং এটা প্রসারিত হতে পারে আর শেষপর্যন্ত ফেটে ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। ভ্রুণ সাধারনত বাঁচতে পারে না এবং এই অবস্থা গর্ভবতী মায়ের জন্য প্রাণঘাতী হতে উঠতে পারে, তাই শুরুতেই চিকিৎসা করা দরকার।

এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি (জরায়ুর বাইরে গর্ভধারণ) এর ঘটনা বিশ্বজুড়ে প্রায় 0.25 - 2 শতাংশ এবং প্রতি 161টি গর্ভবস্থার মধ্যে একটি ক্ষেত্রে এটি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

এর প্রধান লক্ষন ও উপসর্গগুলো কি কি?

সাধারন গর্ভধারণের ক্ষেত্রে, মহিলারা সাধারনত মাথা ঘোরানো এবং বমনেচ্ছা ও বমি হওয়ার উপসর্গ উপলব্ধি করেন। এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি (জরায়ুর বাইরে গর্ভধারণ)র উপসর্গগুলো গর্ভধারণের 4-10 সপ্তাহের মধ্যে দেখা দিতে শুরু করে।

সাধারন উপসর্গগুলো হলো:

কোনও কোনও ক্ষেত্রে, এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি (জরায়ুর বাইরে গর্ভধারণ)-র কারণে ফ্যালোপিয়ান টিউব ছিঁড়ে যেতে পারে এবং তার সঙ্গে অতিরিক্ত উপসর্গ দেখা দেয়:

  • অতিরিক্ত রক্তপাত
  • কাঁধে ব্যথা
  • মূত্র অথবা মলত্যাগের সময় ব্যথা
  • মাথাঘোরা
  • ঘাম হওয়া
  • ফ্যাকাসে ভাব

এর প্রধান কারনগুলো কি কি?

এর সঠিক কারণ এখনও অজানা। নিম্নলিখিত কারণগুলি এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি (জরায়ুর বাইরে গর্ভধারণ)-এর সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়।

  • 40-এর ওপরে বয়স
  • পেটের অপারেশনের ইতিহাস, টিউবাল লাইগেশন সহ তলপেটে অস্ত্রোপচার (গর্ভধারণ আটকানোর জন্য) এবং তলপেটের প্রদাহ রোগ
  • ফ্যালোপিয়ান টিউবে আঘাত
  • আগে হওয়া এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি (জরায়ুর বাইরে গর্ভধারণ)
  • গর্ভনিরোধক বড়ি বা জরায়ুতে বসানো যন্ত্র
  • ডিম্বাণু নিষেকের জন্য চিকিৎসা

এটি কিভাবে নির্নয় ও চিকিৎসা করা হয়?

যদি আপনি গর্ভধারণের সময় উপরোক্ত কোনও উপসর্গ অনুভব করেন তবে আপনার চিকিৎসক (গায়নোকোলোজিস্ট)-এর সাথে পরামর্শ করুন। তিনি প্রাথমিকভাবে আপনার পেটের নিম্নভাগ (তলপেট)-এর শারীরিক পরীক্ষা করবেন আপনার পেটে ব্যথার সঠিক জায়গা ও শিথিলতাতা নির্ণয় করার জন্য। এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি (জরায়ুর বাইরে গর্ভধারণ) হয়েছে, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার জন্য ইউটেরাসের আলট্রাসাউন্ড স্ক্যান করা হয় ও গর্ভধারণের পরীক্ষা করা হয়। এইচসিজি ও প্রোজেস্টেরনের মতো গর্ভধারণ হরমোনের মাত্রা খেয়াল রাখা হয়।

বর্তমানে এই সমস্যার জন্য ওষুধ প্রয়োগ ও অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে এর চিকিৎসা করা হয়। টিউব ফেটে গেলে এবং তার ফলে ভেতরে রক্তপাত হলে ল্যাপারোটোমি নামক অস্ত্রোপচারের সাহায্য নেওয়া হয়।

এক্টোপিক প্রেগন্যান্সির পরে ভবিষ্যতে গর্ভধারণের সম্ভাবনা কমে যেতে পারে বটে, কিন্তু যদি ফ্যালোপাইন টিউব ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, তাহলে সম্ভাবনা বেশ ভালোই।



তথ্যসূত্র

  1. American Pregnancy Association. Ectopic Pregnancy. [Internet]
  2. Vanitha N Sivalingam et al. Diagnosis and management of ectopic pregnancy. J Fam Plann Reprod Health Care. 2011 Oct; 37(4): 231–240. PMID: 21727242
  3. Florin-Andrei Taran et al. Dtsch Arztebl Int. 2015 Oct; 112(41): 693–704. PMID: 26554319
  4. MedlinePlus Medical Encyclopedia: US National Library of Medicine; Ectopic Pregnancy
  5. Varma R, Gupta J. Tubal ectopic pregnancy.. BMJ Clin Evid. 2009 Apr 20;2009. pii: 1406. PMID: 19445747