পারকিনসন রোগ - Parkinson's Disease in Bengali

Dr. Nabi Darya Vali (AIIMS)MBBS

May 09, 2019

March 06, 2020

পারকিনসন রোগ
পারকিনসন রোগ

পার্কিনসন রোগ কাকে বলে?

পার্কিনসন রোগ হল একটি স্নায়বিক অসুস্থতা যেটি নিউরোনের (স্নায়ুর কোষ) উপর প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে মস্তিষ্কে বর্ধনশীল ক্ষয়ের সৃষ্টি করে। এই নিউরোনগুলি ডোপামিন নামক নিউরোট্রান্সমিটারের সাহায্যে মস্তিস্ক জুড়ে বার্তা পাঠানোর জন্য দায়ী। স্বাভাবিক অবস্থায় ডোপামিনের সাহায্যে মসৃণ ও ভারসাম্যপূর্ণ পেশী নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হয়। এই নিউরোট্রান্সমিটারটির অভাবের ফলেই পার্কিনসন রোগের উপসর্গগুলি দেখা দেয়।

এর প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলি কি?

পার্কিনসন রোগের সবথেকে প্রথম ও সাধারণ উপসর্গগুলির মধ্যে একটি হল দেহের কোন একটি অংশে কম্পনের অনুভূতি, এটি হতে পারে হাতে বা পায়ে, এমনকি চোয়ালেও। হাতের বিশ্রামের সময় সাধারণত এই কম্পন দেখতে পাওয়া যায়, মূলত তর্জনীর উপর বুড়ো আঙুলের নড়াচড়া হিসাবে।

দ্বিতীয় যে উপসর্গটি সাধারণত দেখতে পাওয়া যায় সেটি হল পেশীর কাঠিন্য। অনিয়ন্ত্রিত পেশী কাঠিন্যের ফলে অবাধ অঙ্গপরিচালনে ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়। এই রোগীদের মধ্যে যেকোন ক্রিয়াকলাপের গতি ক্রমশ কমতে থাকে। স্নান বা খাওয়ার মত সহজ কাজ সম্পূর্ণ করতেও অস্বাভাবিক রকম বেশি সময় লাগতে পারে।

এই রোগের অগ্রসর পর্যায়ের উপসর্গগুলির মধ্যে আছে ভারসাম্যের অভাব, ডিপ্রেসন বা অবসাদ, মুখোশসদৃশ অভিব্যক্তি এবং নুয়ে পড়া দেহভঙ্গিমা।

তুলনামূলক অপরিচিত উপসর্গগুলি হল ভয়, লালাক্ষরণ, ত্বকের সমস্যা, মূত্র-সংক্রান্ত সমস্যা এবং যৌনক্রিয়ায় অক্ষমতা। কম্পনের কারণে রোগীর হাতের লেখা এবং কথা বলাও যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্থ হয়।

এটির প্রধান কারণ কি?

যদিও এই রোগের সম্ভাব্য কারণের খোঁজে গবেষণা চলছে, এখনো অবধি তা খুঁজে পাওয়া যায়নি। জিনগত কারণ এবং কিছু পরিবেশগত উপাদান পার্কিনসনের সম্ভাবনা বৃদ্ধির জন্য দায়ী বলে মনে করা হয়।

জিনের পরিবর্তনকেও পার্কিনসন রোগের সম্ভাব্য কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, কিন্তু এর নিশ্চিত প্রভাব এখনো পরিষ্কার নয়।

কৃষিক্ষেত্রে ব্যবহৃত কীটনাশকের সংস্পর্শ এই রোগটির একটি সম্ভাব্য পরিবেশগত উপাদান। অন্যান্য বিরল কারণগুলি হলো কয়েকটি এন্টিসাইকোটিক ওষুধ বা মস্তিষ্কের অসুস্থতা বা অতীতে একাধিক স্ট্রোকের আক্রমণ।

কিভাবে এর নির্ণয় ও চিকিৎসা করা হয়?

পার্কিনসন রোগের নির্ণয় করা সহজ নয়, কারণ এর নিশ্চিতকরণের জন্য কোন নির্দিষ্ট রক্ত পরীক্ষা বা ল্যাবরেটরি পরীক্ষা নেই। তাছাড়া, এর উপসর্গগুলো প্রায়শই অন্যান্য সমস্যা, যেমন অস্থিজনিত অস্বাভাবিকত্ব বা ভিটামিনের অভাব প্রভৃতির উপসর্গের সাথে সাদৃশ্য বহন করে।

সুতরাং রোগীর বিস্তৃত ইতিহাস এবং পূর্ববর্তী ওষুধের ব্যবহার সঠিকভাবে সংগ্রহ করা প্রয়োজন। মস্তিষ্কের উপর এর সামগ্রিক প্রভাব দেখার জন্য সিটি স্ক্যান বা এমআরআই করা হতে পারে। একজন অভিজ্ঞ স্নায়ুবিশেষজ্ঞের সাথে আলোচনা করা উচিত যিনি সাময়িক ব্যবধানে উপসর্গগুলির পরীক্ষা করতে থাকবেন এবং রোগের বিস্তারের উপর নজর রাখবেন।

রোগটির চিকিৎসায় ডোপামিনের অভাবপুরণের জন্য বিভিন্ন প্রকার ওষুধ পাওয়া যায়। এই ওষুধগুলো মস্তিষ্কের ক্ষতিগ্রস্থ অঞ্চলকে উদ্দীপ্ত করে। কিন্তু দীর্ঘকালীন ব্যবহারের ফলে ওষুধগুলোর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।

যদি ওষুধগুলি উপসর্গের নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে তবে অস্ত্রপচারের চিন্তা করা হয়। এই পদ্ধতিতে ইলেকট্রোড বসিয়ে মস্তিষ্ককে উদ্দীপ্ত করা হয় এবং কম্পন সৃষ্টির জন্য দায়ী উদ্দীপনাগুলিকে বাধা দেওয়া হয়।

পার্কিনসন রোগ একটি বর্ধনশীল অসুস্থতা। এই সমস্যার কোন নির্দিষ্ট নিরাময় নেই; কিন্তু এই অসুখে আক্রান্তদের দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য হওয়া উচিত মানসিক সুস্থতা ও শারীরিক কার্যকলাপ বজায় রাখা।



তথ্যসূত্র

  1. Ennett DA,Beckett AM,Shannon KM et al. Prevalence of parkinsonian signs and associated mortality in a community population of older people. New England Journal of Medicine. 1996;334(24):71–76. Ref ID: 2772.
  2. National Institute on Aging [Internet]: U.S. Department of Health and Human Services; Parkinson's Disease.
  3. National Institute of Neurological Disorders and Stroke [internet]. US Department of Health and Human Services; Parkinson's Disease Information Page.
  4. National Institutes of Health; [Internet]. U.S. National Library of Medicine. Parkinson’s Disease.
  5. Center for Disease Control and Prevention [internet], Atlanta (GA): US Department of Health and Human Services; Genetics, coffee consumption, and Parkinson's disease.
  6. MedlinePlus Medical Encyclopedia: US National Library of Medicine; Parkinson's Disease.

পারকিনসন রোগ জন্য ঔষধ

Medicines listed below are available for পারকিনসন রোগ. Please note that you should not take any medicines without doctor consultation. Taking any medicine without doctor's consultation can cause serious problems.